ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশের প্রথম সেন্টার বেইসড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন হবে আগামী ২৮ অগাস্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে নির্মিত এ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন করবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু অর্জনের মত স্বাস্থ্যখাতে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালও দেশের জন্য একটি বিরাট অর্জন। দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় বিএসএমএমইউ’র অধীন দেশের প্রথম ও একমাত্র ৭৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে থাকবে সিঙ্গাপুর, কোরিয়াসহ বিশ্বের অধিকাংশ উন্নত দেশের সেন্টার বেইজড চিকিৎসা সেবা পদ্ধতি।’
কোরিয়ান সরকারের ইডিসিএফ কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে এই মেগা প্রকল্পটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিএসএমএমইউ বাস্তবায়ন করছে। বিএসএমএমইউ’র উত্তর পাশে ৩ দশমিক ৪ একর জায়গায় এক হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত (সুপার স্পেশালাইজড) হাসপাতাল।
এইচডিসি, স্যামসাং, সানজিন এ তিনটি কোরিয়ান কোম্পানি হাসপাতালটি যৌথ ভাবে নির্মাণ করেছে। নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে এক হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
হাসপাতালে যে সকল সুবিধা পাওয়া যাবে-
১. সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আন্তর্জাতিক মানের মডিউলার অপারেশন থিয়েটার থাকবে ১১টি।
২. বিশ্বমানের পাঁচটি সেন্টারের মধ্যে জরুরি বিভাগ, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড, কিডনি ডিজিজ এবং কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট, হেপাটোলজি লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট এবং ১০০ বেডের আইসিইউ।
৩. ৬৪টি কেবিন থাকবে; এর মধ্যে রয়েছে ছয়টি ভিভিআইপি কেবিন, ২৩টি ভিআইপি কেবিন। বাকিগুলো ডিলাক্স কেবিন। এছাড়াও থাকবে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার। এসব অপারেশন থিয়েটারে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। অত্যাধুনিক সিটিস্ক্যান, এমআরআই থেকে শুরু করে সব পরীক্ষা হবে ডিজিটালাইজড।
৪. মৌলিক গবেষণার সুযোগসহ গবেষণার জন্য আলাদা সেন্টার থাকবে। রোগীদের সুবিধার্থে নতুন সংযোজন যেমন বোনম্যারো ট্রাান্সপ্লান্টেশন, জিন থেরাপি এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক গবেষণাপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
৫. উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ দেশের প্রথম বিশ্বমানের মডেল হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হবে।
৬. হাসপাতালটি উদ্বোধনের পর থেকে দুই বছর কোরিয়ার ছয় জন প্রকৌশলী এবং ৫০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োজিত থাকবেন। সেখানে রোবটিক সার্জারিরও ব্যবস্থা থাকবে।
৭. রোগীদের সুবিধার্থে চিকিৎসা সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধি এবং মান আরও উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগ খোলা ও ফেলোশিপ চালু করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে- অর্থোপেডিক সার্জারির অধীনে অর্থোস্কোপিক ও অর্থোপ্লাস্টি, স্পাইন সার্জারি এবং হ্যান্ড অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি ডিভিশন খোলা, শিশু বিভাগের অধীন পেডিয়াট্রিক অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ খোলা, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ ও কমিউনিটি অপথালমোলজি বিভাগের অধীন ভিট্রিও রেটিনা, গ্লুকোমা, কর্ণিয়া, অকুলোপ্লাস্টি, ক্যাটারেক্ট ও রিফ্রেকটিভ সার্জারিতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ফেলোশিপ ইত্যাদি।
৮. এছাড়া বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স কারিকুলাম এবং এমএসসি ইন নার্সিং কোর্স কারিকুলামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।